রবিবার, ২২ জানুয়ারী, ২০১২

জীবনের লক্ষ্য নির্ধারণের টিউটোরিয়াল

দুনিয়াটা একটা জীবনের খেলাঘর। কি চমকে দিলাম নাকি ???? এই কথাটি বলে??? প্রিয় পাঠকঃ সত্যিই কি আপনাদের চিন্তা হয় না যে জীবনের খেলাঘরে আমরা খেলছি কেবল কাঠের পুতুলের মত। আমরা খেলছি দুনিয়ার চাওয়া পাওয়া,লাভ লোকসান নিয়ে। কেউ কি ভেবে দেখেছেন আমরা যে এই দুনিয়ায় এসেছি তার প্রকৃত উদ্দেশ্য কি???? কি উদ্দেশে মহান আল্লাহ্‌ আমাদের সৃষ্টি করেছেন??? এবং আমরা দুনিয়ায় এসে কতটুকুই বা আমাদের দায়িত্ব পালনে সচেষ্ট হয়েছি??? কতটুকুই বা কুরআন ও সুন্নাহ অনুসরণ করে জীবনের পথে চলছি ??? আমি বিশিষ্ট মুসলিম চিন্তাবিদ ও ইসলামী বক্তা ডাঃ জাকির নায়েকের "আমাদের জীবনের লক্ষ্য" সম্পর্কিত আলোচনা শুনে সত্যিই মুগ্ধ হয়েছি। যা আমাকে সত্যিই ভাবিয়ে তুলেছে আমাদের জীবনের প্রকৃত লক্ষ্য কি হওয়া উচিৎ সে সম্পর্কে। আর দেরি না করে চলুন আলোচনায় চলে যাই......
আজকে বিশ্বের প্রতিটি মানুষ কি চিন্তা করে জানেন????? অনেক টাকা বেতনের চাকরি করবো, আয়ের ভিত্তিতে চলাফেরা খাওয়া, দাওয়া , পোশাক আশাক পড়বো। এই তো জীবন। আর কি কিছু দরকার আছে জীবনে?????
যেকোনো মানুষের জীবনে লক্ষ্যটা নির্ধারণ করা কিন্তু সবচেয়ে বড় ব্যাপার।কারণ লক্ষ্যের উপর ভিত্তি করেই কাজের ডালপালা, শাখা প্রশাখা সম্প্রসারিত হয়। আমাদের সমাজে এমন কিছু মানুষ আছে যারা সবসময় নিজেদের নিয়ে ব্যস্ত থাকে, আবার কেউ বাবা মাকে নিয়ে সব সময় ব্যস্ত থাকে, আবার কেউ স্বামী স্ত্রীর ইচ্ছা অনিচ্ছা কে বেশি মূল্য দেয়, আবার কেউ সন্তানের চাওয়া পাওয়াকে তার জীবনের মুখ্য উদ্দেশ্য হিসেবে বিবেচনা করে কাজ করতে থাকে। আবার কেউ কেউ আছে প্রতিবেশী কেন্দ্রিক, প্রতিবেশীর সাথে সবসময় প্রতিযোগিতা করায় ব্যস্ত। আবার কেউ কেউ আছে বন্ধুদের সাথে প্রতিযোগিতা করায় সদা ব্যস্ত। আবার কেউ কেউ নিজের শত্রুদের বিরুদ্ধে সারাদিন পরিকল্পনা করতে থাকে কিভাবে প্রতিশোধ তোলা যায়। অর্থাৎ "ইটের জবাব পাথরের মাধ্যমে দিতে হবে" এই চিন্তায় সদা ব্যস্ত। হায়রে সমাজ!!!!!! একি তোমার বেহাল দশা???? এটাই কি আশান্বিত???? হ্যায় চলছে সমাজের চাকা। আমরা কেবলই ঘুরপাক খাচ্ছি এ চাকায়।
প্রখ্যাত ইসলামী চিন্তাবিদ ও বক্তা ডাঃ জাকির নায়েক মানুষের জীবনের লক্ষ্যকে এভাবে উপস্থাপন করার চেষ্টা করেছেন, যা সত্যিই মনোমুগ্ধকর। ইসলামিক এর পুরো অর্থ বিশ্লেষণ করলেই আমরা এর উত্তর পেয়ে যাবো। "আই"<b></b> দ্বারা তিনি বোঝাতে চেয়েছেন "ইসলামিক" অর্থাৎ মানুষের লক্ষ্য অবশ্যই কুরআন ও সুন্নাহর আলোকে হওয়া বাঞ্ছনীয়।"এস" দ্বারা তিনি বোঝাতে চেয়েছেন "প্যাসিফিক"। একটা উদাহরণের সাহায্যে বিষয়টা আরও পরিষ্কার হতে পারে। যেমনঃ কোন শিক্ষক পাখী শিকারের শিক্ষা দিচ্ছিলেন ছাত্রদের। তিনি ছাত্রদের বললেন..." আমি যতক্ষণ না বলবো তোমরা তীর ধনুক পাখিটির দিকে তাক করে থাকবে কিন্তু তীর ছুড়বে না"।তারপর শিক্ষক ছাত্রদের একে একে প্রশ্ন করলেন। প্রথম ছাত্রকে বললেন," তুমি কি দেখতে পাচ্ছ???"তখন সে উত্তর দিল আমি বন,গাছ,ও পাখিটি দেখতে পাচ্ছি। দ্বিতীয় জনকে প্রশ্ন করা হলে সে উত্তর দিল" আমি গাছ,গাছের ডালপালা ও পাখিটিকে দেখতে পাচ্ছি। তারপর তৃতীয় ছাত্রকে একই প্রশ্ন করা হলে সে উত্তর দিলঃ" আমি গাছের ডালপালা, পাখিটি,এবং পাখিটির চোখ দেখতে পাচ্ছি। ৪র্থ ছাত্রকে যখন প্রশ্ন করা হলো তখন সে উত্তর দিলঃ''আমি শুধু পাখিটির চোখ দেখতে পাচ্ছি আর কিছুই দেখতে পাচ্ছি না"।সুতরাং এইরকম ৪র্থ ছাত্রের মতো জীবনের লক্ষ্য অবশ্যই নিদৃষটো হতে হবে। মানুষের জীবনের লক্ষ্য অবশ্যই লুকরেটিভ অর্থাৎ লাভজনক হতে হবে এই দুনিয়ার জন্য পাশাপাশি পরকালের আযাব থেকে মুক্তি দানের জন্য। কিন্তু পরকালের মুক্তির বিষয়টিই এখানে প্রাধান্য পাবে। মহান আল্লাহ্‌ সূরা বাকারাহ এর ২০১ নম্বর আয়াতে বলেছেন......আবার এমন কতক লোক আছে যারা বলে"হে আমাদের প্রভু! তুমি আমাদের দুনিয়া ও আখিরাতে মঙ্গল দান কর এবং আমাদেরকে আগুনের শাস্তি হতে রক্ষা কর।"
মানুষের লক্ষ্য অবশ্যই''এপ্রোপ্রিয়েট" অর্থাৎ যথোপোযুক্ত হতে হবে। লক্ষ্য অবশ্যই "মেজারেবল" অর্থাৎ পরিমাপযোগ্য হতে হবে। যেমনঃকোন স্থপতি যদি মনে করেন যে সে দুনিয়ার সবচেয়ে উঁচু দালান নির্মাণ করতে চান। এক্ষেত্রে তিনি উদাহরণ হিসেবে আবুধাবিতে যে বিশ্বের সবচেয়ে উঁচু বিল্ডিং আছে তার চেয়ে উঁচু বিল্ডিং তৈরির কথা বলতে পারেন।লক্ষ্য অবশ্যই "ইনটেনশন" এর উপর নির্ভরশীল।নিয়তের উপর নির্ভর করেই প্রতিটি কাজ সম্পাদিত হওয়া প্রয়োজন। এক্ষেত্রে নিয়ত অবশ্যই আল্লাহ্‌র সন্তুষ্টি অর্জন হতে হবে। লক্ষ্য অর্জনের ক্ষেত্রে "কনসিসটেনন্সি" রক্ষা করা একটি গুরুত্বপূর্ণ বিষয়।যেমনঃ কোন ব্যক্তি যদি মনে করেন যে পুরো রমজানের ৩০ দিনে প্রতিদিন একটু একটু করে কুরআন পড়বেন। ধারাবাহিকভাবে পড়তে পড়তে রমজান শেষে দেখা যাবে কুরআন পড়া শেষ হয়েছে। এভাবে প্রত্যেক ব্যক্তিই যদি তার লক্ষ্য অর্জনের ক্ষেত্রে ধারাবাহিকতা রক্ষা করে তবে লক্ষ্য অবশ্যই অর্জিত হয় বলে আশা করা যায়।
এক্ষেত্রে ডাঃ জাকির নায়েক পোলিওতে আক্রান্ত ১৯৬০ সালের অলিম্পিকে সোনাজয়ী উইলমা রুডলফ্‌ এর ঘটনাটিকে উদাহরণ হিসেবে ব্যবহার করেছেন।উইলমা ছিল মূলত প্রতিবন্ধী একজন শিশু।উইলমার মা সবসময় উইলমাকে সাহস যোগাতো জীবনে চলার পথে। মার প্রেরণায়ই তার বয়স যখন ৯-১৩ বছরের মধ্যে তখন সে দৌড় প্রতিযোগিতায় অংশগ্রহণ করে এবং লাস্ট হয়।তারপর উইলমা একসময় ১৯৬০ সালের অলিম্পিকের জন্য নির্বাচিত হয় এবং দৌড় প্রতিযোগিতায় অংশগ্রহণ করে।একে একে সে ১০০ মিটার দৌড়, ২০০ মিটার স্প্রিনট্‌, ৪০০ মিটার রীলে সবগুলোতেই অংশগ্রহণ করে ৩টি স্বর্ণপদক অর্জন করে। যা ছিল মূলত ১৯৬০ সালের অলিম্পিকে ঘটে যাওয়া অভাবনীয় একটি সত্য ঘটনা।
এখন যে বিষয়টি আলোচনায় আসতে পারে তা হলো তার লক্ষ্য "ইসলামিক" ছিল কিনা?????? "আই" মানে ইসলামিক বিধিনিষেধ মেনে কুরআন ও সুন্নাহ্‌ মোতাবেক ছিল কিনা??? মনে হয়না তার লক্ষ্য কুরআন ও সুন্নাহ্‌ মোতাবেক ছিল।''এস" দ্বারা স্পেসিফিক অর্থাৎ তার লক্ষ্য কি নিদৃষ্ট ছিল??? অবশ্যই । তার লক্ষ্য ছিল দৌড় প্রতিযোগিতায় জয়লাভ করা। "এল" দ্বারা বুঝানো হয়েছে তার লক্ষ্য কতটা লুকরেটিভ ছিল???? অর্থাৎ তার প্রধান উদ্দেশ্য কি আল্লাহ্‌র সন্তুষ্টি অর্জন???? এটা ততক্ষণ সম্ভব নয় যতক্ষণ উইলমা তার অর্জিত স্বর্ণপদকসমূহ আল্লাহ্‌র সন্তুষ্টির উদ্দেশ্যে সমর্পণ না করে।"এ" দ্বারা বুঝানো হয়েছে লক্ষ্য "এপ্রোপ্রিয়েট" ছিল কিনা??? উইলমার লক্ষ্য অবশ্যই যথোপযুক্ত ছিল।কারণ তার লক্ষ্য ছিল দৌড় প্রতিযোগিতায় জয়লাভ করা।"এম" দ্বারা বুঝানো হয়েছে তা "মেজারেবল" বা পরিমাপযোগ্য কিনা???? হ্যায় অবশ্যই তা পরিমাপযোগ্য। "আই'' দ্বারা "ইনটেনশনকে" বুঝানো হয়েছে। যদি উইলমার "ইনটেনশন" থেকে থাকে খ্যাতি অর্জন করা তবে তা সে অবশ্যই পেয়েছে। কিন্তু আল্লাহ্‌র সন্তুষ্টি অর্জন করেছে কিনা তা আমরা জানিনা।"সি" দ্বারা এখানে "কনসিসটেনন্সি" বা "ধারাবাহিকতাকে" বোঝানো হয়েছে। উইলমা তার লক্ষ্য অর্জনে ধারাবাহিকভাবে চেষ্টা করেছে কিনা???? হ্যায় তার চেষ্টায় ধারাবাহিকতা ছিল।
আর একজন ব্যক্তির কথা না বললেই নয় তিনি হচ্ছেন ''শেখ আহামেদ দিদাদ"।যিনি ডাঃ জাকির নায়েককে শারীরিক ডাক্তার থেকে মানুষের মনের ডাক্তারে রূপান্তরিত করেছেন। শেখ আহামেদ দিদাদ খুবই সাদাসিদে জীবন যাপন করতেন। তিনি বিক্রেতার চাকুরী করতেন। ক্লাস সিক্সে পড়ার সময় তিনি তার পড়াশুনা ছাড়তে বাধ্য হন। তিনি ইন্ডিয়াতে জন্ম নিয়েও মাতৃভূমি ছেড়ে দক্ষিণ আফ্রিকায় যেয়ে বসবাস করতে বাধ্য হন। সেখানে তিনি খ্রিষ্টান পাদ্রীদের দ্বারা বিভিন্নভাবে নির্যাতনের স্বীকার হন। তখন তিনি চিন্তা করলেন এই সকল খ্রিষ্টান পাদ্রীদের যথোপযুক্ত উপায়ে উত্তর দেওয়া প্রয়োজন। এরই প্রেক্ষিতে তিনি মাওলানা " ''রাহমতুল্লাহ কারানভির" "ইজহারুল হক"বইটি পড়লেন। পাশাপাশি অন্যান্য ধর্মের মূল বিষয়গুলোও পড়লেন। এইভাবে তিনি আল্লাহ্‌র পথে সংগ্রামে লিপ্ত থেকে কাজ করতে থাকলেন। তারপর ১৯৮৪ সালে তিনি তখনকার দিনের প্রসিদ্ধ খ্রিষ্টান বক্তা ''রেভারেঞ্জ জিমি সেগাটের"সাথে বিতর্ক করেন।দেখা যায় আল্লাহ্‌র অশেষ মেহেরবানীতে তিনি জিমি সেগাটের আক্রমণের যথোপযুক্ত উত্তর দিতে সক্ষম হন।
আর এখন যে বিষয়টা আসবে তা হল তার লক্ষ্য আদৌ  ''ইসলামিক" ছিল কিনা???
"আই"- কুরআন ও সাহি হাদিস মোতাবেক ছিল???? হ্যা অবশ্যই।''এস''- ''স্পেসিফিক" ছিল কি??? হ্যায় অবশ্যই শুনিদৃষ্ট ছিল। যেমনঃ তার লক্ষ্য ছিল ইসলাম সম্পর্কে মানুষের মনে যে ভুলভ্রান্তি ছিল তা দূর করতে সাহায্য করা এবং যথাযথ জবাব নিশ্চিত করা।''এল"-''লুকরেটিভ" অর্থাৎ লাভজনক ছিল কি???? প্রথমত আখিরাত ও দ্বিতীয়ত দুনিয়ার জন্য। হ্যায় অবশ্যই তা ছিল। ১৯৮৬ সালে মুসলিম বিশ্বের সবচেয়ে বড় পুরস্কার ''কিংফয়সাল'' এ্যাওয়ার্ড সে লাভ করে মানবতার সেবা করার জন্য। আল্লাহ্‌ তাকে অবশ্যই আখিরাতেও ফলদান ইনশাআল্লাহ্‌।''এ''- তার লক্ষ্য কি ''এপ্রোপ্রিয়েট" ছিল??? হ্যায় তার লক্ষ্য অবশ্যই যথোপযুক্ত ছিল। খ্রিষ্টান মিশনারি যারা মুসলমানদেরকে অত্যাচার নিপীড়ন করতো তাদের জন্য এটা একটা যথোপযুক্ত উত্তর ছিল। পাশাপাশি তার বাগ্মিতা হাজার হাজার তরুণকে অনুপ্রেরণা দান করেছিল।''এম''-তার লক্ষ্য কি ''মেজারেবল'' অর্থাৎ পরিমাপযোগ্য ছিল??? হ্যায় তার লক্ষ্য অবশ্যই পরিমাপযোগ্য ছিল। কারণ তিনি খ্রিষ্টান মিশনারিদের বইসমূহ সংগ্রহ করে সেগুলো অধ্যয়ন করে তবেই যথাযথ উত্তর দিয়েছিলেন। ''আই''- তার ''ইনটেনশন''কি সঠিক ছিল???? হ্যায় তার নিয়ত অবশ্যই সঠিক ছিল। তার নিয়ত ছিল আল্লাহ্‌ ও রাসূলের সন্তুষ্টি অর্জন।''সি''- লক্ষ্যের মধ্যে ধারাবাহিকতা অর্থাৎ ''কনসিসটেন্সি'' ছিল কি??? হ্যায় অবশ্যই তার লক্ষ্যের মধ্যে  ''কনসিসটেন্সি'' ছিল।উপরে যে দুটি ঘটনা বর্ণনা করা হয়েছে তার মধ্যে মূল পার্থক্য কোথায় বলতে পারেন??? মূল পার্থক্য হচ্ছে তাদের লক্ষ্যে। ''উইলমা রুডলফ্‌'' এর লক্ষ্য ছিল-এই দুনিয়ায় দৌড় প্রতিযোগিতায় সফলতা অর্জন যা সে পেয়েছে।শেখ আহামেদ দিদাদ এর লক্ষ্য ছিল- আল্লাহ্‌র সন্তুষ্টি অর্জন এবং আখিরাতের আযাব থেকে মুক্তি লাভ। দুনিয়াতে তিনি ১৯৮৬ সালে মুসলিম বিশ্বের সবচেয়ে বড় পুরস্কার ''কিং ফয়সাল'' এ্যাওয়ার্ডে ভূষিত হন। আখিরাতেও আল্লাহ্‌ তাকে পুরস্কৃত করবেন ইনশাআল্লাহ্‌।
যদি মহান আল্লাহ্‌ কাউকে এই দুনিয়ায় অর্থ সম্পদ দ্বারা পুরস্কৃত করেন তবে তার উপর নির্ভরশীল হওয়া যাবে না। এক্ষেত্রে আমরা নবী হযরত সুলায়মানের উদাহরণ দিতে পারি। তিনি যথেষ্ট সম্পদশালী ছিলেন কিন্তু তিনি তার উপর নির্ভরশীল ছিলেন না। তাই এটাকে আমরা ''মুবাহ্‌" বলতে পারি।
আমাদের প্রিয় নবী হযরত মুহাম্মাদ(সা:) এর ক্ষমতা, খ্যাতি, ও রাজা হওয়ার সম্পূর্ণ যোগ্যতা ছিল। কিন্তু মহানবী (সাঃ) কখনই তা প্রয়োগ করেননি বা ক্ষমতার অহংকার করেননি।মহানবী(স:) যে সকল উপহার পেতেন তার বেশিরভাগই তিনি তার সাহাবীদের দিয়ে দিতেন।
সুতরাং সম্পদশালী হলে তা আল্লাহর পথে ব্যয় করা অধিক বাঞ্ছনীয়। ব্যয় কুরআন ও সুন্নাহ্‌ মোতাবেক করা উচিৎ। কুরআন ও সুন্নাহ্‌র নির্দেশ সবসময় অনুসরণ করে চলতে হবে।তার অর্থ এই নয় যে নিজেকে ও নিজের পরিবারকে অবহেলা করা। দুনিয়ায় খ্যাতি অর্জনের পর তা আল্লাহ্‌র রাস্তায় ব্যবহার করতে হবে বিভিন্ন কর্মকাণ্ডের মাধ্যমে।
হযরত মুহাম্মাদ(সা:) পৃথিবীর সর্বকালের সব মানুষের জন্য আদর্শ। জর্জ বারনাডশ বলেছেনঃ '' আমি হযরত মুহাম্মদ (সাঃ) সম্পর্কে পড়েছিলাম, আমার মনে হয়েছে তিনি একজন মানবতার রক্ষক''। থমাস কার্লাইল বলেনঃ '' ১ নম্বর হিরো হযরত মুহাম্মাদ (সা:)। লামা টিন ফ্রান্সের একজন বিখ্যাত ইতিহাসবিদ যিনি তুর্কিদের ইতিহাস লিখেছেন তিনি বলেনঃ''বিশাল কারণ, সীমিত প্রয়োজন , বিশাল ফলাফলের উপর ভিত্তি করে যদি একজন ব্যক্তিকে বিবেচনা করা হয় তবে সেই ব্যক্তিটি হবেন মুহাম্মাদ(সাঃ)।এনসাইক্লোপিডিয়া অব ব্রিটেনিকার ৪র্থ সংস্করণে বলা হয়েছে-- '' এই পৃথিবীতে সবচেয়ে সফলইসলামি ব্যক্তিত্ব হযরত মুহাম্মাদ(সা:)''।পবিত্র কুরআনের সূরা আহযাবের ২১ নম্বর আয়াতে বলা হয়েছে---''নিশ্চয়ই তোমাদের জন্য আল্লাহ্‌র রাসূলের চরিত্রে উত্তম (সুন্দর) আদর্শ রয়েছে, অবশ্য সেই ব্যক্তির জন্য যে আল্লাহ ও আখিরাতের দিনের আশা রাখে এবং আল্লাহ্‌কে অধিক স্মরণ করে''। প্রিয়নবী হযরত মুহাম্মাদ(সা:) শুধুমাত্র ধর্মের ক্ষেত্রে নয় সামাজিক, রাজনৈতিক, সবখানে সফল নেতৃত্বের এক বাস্তব উদাহরণ। তিনি যেকোনো প্রকৃত মুমিনদার ব্যক্তির জন্য অনুসরণীয় আদর্শ।
এছাড়া পবিত্র কুরআনে এমন কিছু মহিলাদের উল্লেখ আছে যারা মহিলাদের জন্য অনুকরণীয় আদর্শ হতে পারে। যেমনঃ হযরত ঈসা (আঃ) এর মাতা মরিয়ম, ফেরাউন এর স্ত্রী আছিয়া, হযরত মুহাম্মাদ(সাঃ) এর প্রথম স্ত্রী খাদিজা, ও হযরত মুহাম্মাদ(সাঃ) এর প্রিয়তম কন্যা হযরত ফাতিমা (রাঃ)।
হযরত মুহাম্মাদ (সাঃ) নিজে বলেনঃ ''আল্লাহ্‌ একজন দুর্বল বিশ্বাসীর চেয়ে সবল বিশ্বাসীকে অধিক ভালোবাসেন''
ডাঃ জাকির নায়েক নিজের পরিবর্তনের কথাই সকলের সামনে তুলে ধরেন। শৈশবে আমি তোতলা ছিলাম। আমি নিজেকে কখনও মহান মনে করি না তবে আমি একজনই। আমি নিজেকে আল্লাহ্‌র বান্দা মনে করি । এখন আল্লাহ্‌র রহমতে আমি ১০,০০০ দর্শকের সামনে কথা বলতে পারি। আর অমুসলিমদের সাথে তো কথা বলার সময় তো কখনই আটকাই না।আমি এখন নিজেকে শারীরিক ডাক্তারের চাইতে মনের ডাক্তার হিসেবে বেশি গ্রহণযোগ্য মনে করি। আমি এখন দীনের দাওয়াতের প্রসার ঘটানোর চেষ্টা করি। আমার দর্শন হচ্ছে যা কিছু করবো তা হবে ''ইউনিক''। আমি যখন ডাক্তারি পড়তাম তখন চিন্তা করতাম অস্কার এ্যাওয়ার্ড,গ্র্যামি এ্যাওয়ার্ড এ মানুষ এতো খরচ করে কেননা এই খরচ যদি আল্লাহ্‌র সন্তুষ্টির জন্য করা হয় তবে আমরা দুনিয়া ও আখিরাতে উভয় জায়গায় সফলতা পাবো মাসাল্লাহ্‌। তাই আমি চিন্তা করে পিস টিভি এর কাজ শুরু করি ও ''আই আর এফ" গঠন করি।

( পিস টিভি)




কোন মন্তব্য নেই:

একটি মন্তব্য পোস্ট করুন