সোমবার, ৩১ অক্টোবর, ২০১১

সবাই যেমন ভাবে


মাঝে মাঝে যখন চুপটি করিয়া একা একা সময় গুলোকে দ্রুত সরিয়া যাইতে বাধ্য করিবার একটা অপচেষ্টা করিয়া থাকি তখন মনে মনে কিছু পরিকল্পনা জাগিয়া ওঠে । তখন ভাবিয়া থাকি জীবনকে সুন্দর করিয়া সাজাইবার জন্য কিছু পূর্ব পরিকল্পনা থাকা প্রয়োজন । যাহা আমাদের সামনের পথ দেখাইয়া দিবে । এ সকল কথা আমরা পাঠ্য পুস্তকের রচনাগুলোতে খুব বেশি করিয়া পড়িয়াছি । কিন্তু কখনও কি আমরা ভাবিয়া দেখিয়াছি যে  জন্ম –ধর্ম –মৃত্যু এই সাধারন নিয়মটির বাহিরে বাকি সমস্ত ঘটনা প্রত্যেকটি মানুষের জীবনে ভিন্ন ভিন্ন । আমরা যদি পূর্বেই জানিতাম দশ বৎসর পর আমাদের বিনাশ ঘটিবে । তাহলে কি আমরা আমাদের নিয়া আজিকে এত ব্যাতিবাস্ত হইয়া পড়িতাম জীবনের সার্বিক কল্যাণের নিমিত্তে তাহাকে একটি পূর্ব পরিকল্পনা মাফিক চালনা করা শ্রেয় তাহা আমি কেন সকলেই একবাক্কে মানিয়া নিবে । কিন্তু পরিকল্পনাও এক ধরনের অন্ধকারে ঢিল ছুড়িয়া মারিবার মত । কেননা আমরা বর্তমানে যে পরিবেশের অনুকুলে আমাদের পরিকল্পনাগুকে সুন্দর ভাবে গড়িয়া তুলিতেছি  আগাম্মিকল্ল যে তাহা বিরুপ পরিবেশে তাহার গাম্ভীর্য হারাইবে না তাহা কেও কি বলিতে পারে ? আজিকের অনুকুল কালকে প্রতিকূল হইতেও পারে । এ বিষয়ে মহান সৃষ্টিকর্তা ছাড়া আর কেহ কি অধিক জানিবেন ? ভবিষ্যতে যাহা ঠিকঠাক ভাবে চালাইবার জন্য এত বিশাল পরিকল্পনা করিলাম এখন কিনা তাহাই আবার অন্য আরেকটি অনিশ্চয়তার উপর নির্ভরশীল । আমি পরিকলনা মাফিক জীবন চালনার বিপক্ষে কথা বলিতেছি না । শুধুমাত্র ইহার প্রকৃত সরূপটি  তুলিয়া ধরিতে চেষ্টা করিলাম ।

রবিবার, ৩০ অক্টোবর, ২০১১

অদ্ভুত আধার এক এসেছে এই পৃথিবীতে আজ

অদ্ভুত আধার এক এসেছে এই পৃথিবীতে আজ,
যারা অন্ধ সবচেয়ে বেশী আজ চোখে দেখে তারা ;
যাদের হৃদয়ে কোন প্রেম নেই , প্রীতি নেই , করুনার আলোড়ন নেই
পৃথিবী অচল আজ তাদের সুপরামশ ছাড়া ।


যাদের গভীর আস্থা আছে আজও মানুষের প্রতি ,
এখনও যাদের কাছে স্বাভাবিক বলে মনে হয়
মহৎ সত্য কিংবা নীতি, কিংবা শিল্প অথবা সাধনা
শকুন ও শেয়ালের খাদ্য আজ তাহাদের হৃদয়


                                         ( জীবনানন্দ দাস )


কিছু কিছু



“এ পার ও পার”
               হাসান


মানুষ তার সব কিছু হারাইয়া , সরবশান্ত হইয়া কুক্ষিগত করিতে থাকে এই বলে যে তার পৃথিবীতে বাচার মত আর কোন আশা নেই ।
পরক্ষনে আমি ইহা ভাবিয়া অবাক হইলাম যে আমার জীবন হইতে কি যেন হারাইয়া গেছে যাহাতে আমার সকল সুখ ও দুঃখ অনুভূতি হারাইয়া গেছে । তথাপি  আমি ইহাতে আমার মনের নিগুর মনোযোগ টুকু অকপটে ঢালিয়া দিয়া নিচ্চিন্তের পথ ধরিতে পারিলাম নহে। কেহ যে আমার মনটাকে একবার এ প্রান্তে আনিয়া আবার অপর প্রান্তে নিয়া দুধ কলা খাওইয়া বরই আপ্যায়ন করিতেছে তাহাতে আমার লেশমাত্র সন্দেহ রহিল না ........................।

             (বিঃ দ্রঃ   শরৎচন্দ্র হইবার সাধ হইয়াছে ,  তাই চেষ্টা করিতেছি।    চলিবে............)



“সংশয়ে সংকল্প সদা টলে .........”
কামিনি রায়  এর কথাটি আমার জীবনকে  খুব বেশি  করে পর্যবেক্ষণ করিতেছে । পথের বাকে দারিয়ে ভাবিতে থাকি পথ কোন তীরে গিয়ে পারি জমাইবে । এমন হইতে পারে এ আমার দূরদর্শিতার অভাব ।
আজকাল আমি প্রায় ভাবিতে থাকি কোন নদিতেই বা আমি বইঠা হাতে বসিয়া আছি ,কোন তীরে নদী ভিড়াইবার জন্য । সবখানে একটা ইতস্তত ভাব থাকিয়া যাই । শেষমেশ আমি ঠিক বুঝিয়া উঠিতে  পারিনা যে কি আমাকে করিতে হবে । সকল কিছু ভাবিলে বুকের মধ্য একটা চাপা উত্তেজনা কাজ করে ।



মানুষ অনেক কিছু হারাইয়া , সর্বস্বান্ত হইয়া, নিজেকে শুন্য ভাবিয়া নিঃস্বতাই ও একাকীত্বে হাহাকার তোলে । তাহার জীবনের সমস্ত চলার মনঃশক্তি  চালিকা বস্তু হারাইতে বসিয়া শুধু অকুল পাথার ভাবিয়া থাকেন । পূর্বসূত্রে ইহা ভাবিয়া আমারও বারংবার এই প্রশ্ন মনে মনে জাগিল যে কি এমন চরম পরম রত্ন আমি আমার জীবন হইতে হারাইয়া ফেলিয়াছি যে আমাকে তাহা এত একা এত অসহায় করিতে বাধ্য করিতেছে । যাহা সকলের  বোধগম্য নয় তাহা সকলের মাঝে প্রকাশ করার একটা বৃথা চেষ্টা করিতেছি ভাবিয়া মনে মনে একটু বিচলিত হইয়াও আবার তাহাই করিতে বসিয়াছি । যাহা আমার মনে শত শত বার নয় হাজার বার প্রশ্ন করিয়া দ্বার প্রান্ত হইতে উত্তর না পাইয়া ফিরিয়া যাইতেছে , নিজের জন্য না হইলেই তাহার জন্য মনটা বড়ই  কাঁদিতেছে  জ্ঞান সাধনে নিমগ্ন হইয়া আবার সহসা আবির্ভূত সমস্যাই ভয় ও সঙ্কোচ বোধ করিয়া আবারো পূর্ব আসনে অধিষ্ঠিত হওয়া বোকামি ছাড়া আর কিছুই হইতে পারে  না । তথাপি আমি ইহাতে আমার মনের নিগুড় রহস্যটুকু অকপটে ঢালিয়া দিয়া নিচ্চিন্তের পথ ধরিতে পারিলাম নহে । কেহ যে আমার মনটাকে অসীম সীমানার একপ্রান্ত হইতে অপর প্রান্তে তাড়িয়া আবার সেই প্রান্তে আনিয়া দুধ কলা খাওইয়া বড়ই আপ্যায়ন করিতেছে তাহাতে আমার লেশমাত্র সন্দেহ রহিল নয় । কি সেই বস্তু যে আমাকে ভুলাইয়া আমার আমিকে বারংবার বিড়ম্বনাই ফেলিয়া  দূর হইতে দাঁড়াইয়া দাঁড়াইয়া তামাশা দেখিবার তরে আমাকেই শুধু নিরীক্ষণ করিতেছে তাহা কোনও ঐশ্বর্য হোক , কিংবা রমনীর রূপ , অথবা অতৃপ্ত ভালবাসা , আর ছিন্নছাড়া রিক্তের বেদনই হোক সেকি আমাকে এখনওঁ আমাকে চিনিতে পারিল না নাকি মনে মনে ভাবিতেছে যে এসো হে বন্ধু আমিতো তোমার অপেক্ষায় চাঁদ ওঁ সূর্যের লুকোচুরি খেলা দেখিয়া সময় কাটাইতেছি । আজ তোমাকে পেয়ে বড়ই আনন্দ বোধ করিতেছি । আজ আমাদের মিলনের পথে নেই কোনও বাঁধা বিপত্তি । আজ আমরা দুজনে গলা ধরিয়া স্বর্গের সোপানে হাঁটিয়া যাইব ।