জনপ্রিয় পোস্টসমূহ

মঙ্গলবার, ২৭ ডিসেম্বর, ২০১১

আমার বিশ্ববিদ্যালয়ের স্মৃতি, হুমায়ুন আহমেদ

হুমায়ুন আহমেদ এর সাথে আমার প্রথম দেখা, বিশ্ববিদ্যালয়ের কার্জন হলে- উনার খাস কামরায়।

আমি নিজেও তখন ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্র, কিন্ত অবস্থান করতাম তার থেকে যোজন যোজন দুরের ডিপার্টমেন্টে। লিটল ম্যাগাজিন এর সঙ্গে যুক্ত ছিলাম, তো কোন একটা সংখ্যায় ১৪ ফেব্রুয়ারীর ছাত্র আন্দোলন নিয়ে তার মন্তব্য জানার জন্য তার কাছে গিয়েছিলাম। সালাম দিয়ে আমার উদ্দেশ্যের কথা বলতেই উনি বললেন- আসলে কি জানো পুরো ব্যাপারটাই (ফেব্রুয়ারীর ছাত্র আন্দোলন) আমার অন্যের মুখে শোনা, কিছুটা পত্রিকার পাতায় দেখা। আমি তো তখন দেশের বাইরে........

উনি এরপর জরুরী কাজে বেরিয়ে যাচ্ছিলেন, আমাকে বললেন- চলো, গাড়ীতে যেতে যেতে বাকী আলাপ করে ফেলা যাবে। সে সময় টেলিভিশনে উনার একটা ধারাবাহিক চলছিল-নাম ভুলে গেছি, ওই যেটার মধ্যে আফজল অভিনয় করেছিল ডাক্তার চরিত্রে, আর খুব বোকা বোকা সব কান্ড করতো।

গাড়ীতে উঠে আমি বললাম- আপনার ওপর ডাক্তাররা তো ভীষন ক্ষেপে আছে, আপনি নাকি ডাক্তারদের ভাবমুর্তি ধুলায় মিশিয়ে দিয়েছেন? উনি হাসলেন-আরে শুধু ডাক্তারদের কথা বলো কেন, সৈয়দ বংশের লোকেরাও মহা ক্ষিপ্ত, আচ্ছা বলো তো- সবাই সিরিয়াসলি সব কিছু নেয় কেন, নাটক তো নাটকই। আমাকে অনেকে বলেছে- এই যে আমার নাটকে আমি কাজের লোকদের দেখাচ্ছি তারা ডাইনিং টেবিলে বসে খাবার খাচ্ছে, তো এটা আমি ব্যক্তিগত জীবনে অনুশীলন করবো কিনা। যদি তা না করি তবে কেন এসব ভন্ডামী করছি। এখন এর উত্তরে আমি কি বলতে পারি, এটা তো বুদ্ধিমানের মতো কথা হলো না। আমি আর আমার নাটকের চরিত্র তো এক জিনিষ না, ডেফিনিটলি আমি আমার বাসায় কাজের লোকদের ডাইনিং টেবিলে বসে খাওয়া এলাও করবো না, কারন আমি তো অমুক (উনার নাটকের সেই চরিত্রের নাম বললেন, যেটায় আবুল হায়াত অভিনয় করেছিলেন) নই। জীবন সম্পর্কে তার দৃষ্টিভঙ্গি তো আমার নয়। ফলে আমাকে কেন তার মতো আচরন করতে হবে?
আমি গম্ভীর ভাবে বললাম- আসলে বাঙালীর সেন্স অব হিউমার কমে যাচ্ছে। আমার মনে হয়, এর পর বিপদ এড়াতে আপনার পরবর্তী নাটকের চরিত্র গুলো ভীনগ্রহের- এ্যটলিষ্ট বাংলাদেশের বাইরে থাকে আনা উচিত.......

আমার কথায় উনি হাসলেন।


( collected )

কোন মন্তব্য নেই:

একটি মন্তব্য পোস্ট করুন